Skip to main content

প্রধানমন্ত্রীকে ভ্যানে চড়িয়ে পেয়েছি ৫০০ টাকা : ভ্যানচালক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজের রিকশাভ্যানে চড়িয়ে দারুণ খুশি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার ইমাম শেখ (১৭)। আপ্লুতও সে। কখনই ভাবতে পারেনি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তার রিকশাভ্যানে চড়ে বসবেন। সে কথাও বলেছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। ভ্যানে চড়ার জন্য টাকা নিতে না চাইলেও প্রধানমন্ত্রী জোর করেই ৫০০ টাকা দিয়েছেন ইমামকে।

আজ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে যেন হারিয়ে যান শৈশবের মধুর স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোতে। একটি সাধারণ রিকশাভ্যানে করে সরকারপ্রধান ঘুরে বেড়ালেন কুয়াশামাখা গ্রামের পথে। 

বঙ্গবন্ধুকন্যার এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করা হলে ব্যাপক সাড়া মেলে। ছবিতে দেখা যায়, ভ্যানে প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছোট বোন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, তাঁর বিদেশি স্ত্রী ও দুই সন্তানকে।

কিশোর ইমাম শেখ নিজের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করে জানায়, আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রায় প্রতিদিনের মতোই সে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি কমপ্লেক্সের এক নম্বর গেটে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় নিরাপত্তারক্ষীরা একটি ভ্যানের খোঁজ করেন। তাঁরা সেখান থেকে একজন ভ্যানচালককে নিয়ে যান। কিন্তু পছন্দ না হওয়ায় তিনি ফিরে আসেন।

ইমাম বলে, ‘পরে নিরাপত্তারক্ষীরা আমার ভ্যানটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, এটা দিয়ে হবে। তখন সবাই আমার রিকশাভ্যানে চড়েন।’

যাওয়ার সময় পথে প্রধানমন্ত্রী ইমামকে জিজ্ঞাস করেন, ‘তুমি কি ভ্যান চালাও?’

ইমাম বলে, ‘জ্বি আপা, আমি ভ্যান চালাই।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তুমি তো আমার বিদ্যুতের ক্ষতি করছো।’

‘আমার ভ্যান তো ব্যাটারি দিয়ে চলে। তাই আপা এই কথা বলছে। শুনে আমি প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে হেসে দেই। তখন প্রধানমন্ত্রীও হেসে দেন। আর কোনো কথা হয়নি’, বলে ইমাম।   

গেট থেকে টুঙ্গিপাড়ায় নতুন বাসভবন পর্যন্ত ভ্যানে করে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি নেমে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে ৫০০ টাকা দেন ভ্যানচালক ইমামকে দেওয়ার জন্য।

ইমাম নিরাপত্তারক্ষীরে কাছ থেকে টাকা নিতে চায়নি। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টাকা জোর করেই ইমাম শেখের হাতে গুঁজে দেন। টাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বেরিয়ে আসে ইমাম। সে পাটগাতি গ্রামের সরকারপাড়ার শেখ আবদুল লতিফের ছেলে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। দেড় বছর ধরে ভ্যান চালায় ইমাম।  

ছবিটির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বাসসকে বলেন, শেখ হাসিনা আজ বেলা ১১টার দিকে রিকশাভ্যানে চড়ে প্রায় ১৫ মিনিট গ্রামটি পরিদর্শন করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিসৌধ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত যান।

‘রিকশাভ্যানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, তাঁর পত্নী পেপি সিদ্দিক, তাঁদের মেয়ে লিলা তুলি সিদ্দিক ও ছেলে কায়াস মুজিব সিদ্দিক। কায়াস মুজিবকে কোলে নিয়ে শেখ হাসিনা গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ভ্যান থামিয়ে স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে প্রাণ খুলে কথা বলেন ও তাঁদের কুশলাদির খোঁজখবর নেন। মানুষকে আরো অবাক করে দিয়ে তিনি ফেরার পথে এই এক কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে আসেন।’

প্রেস সচিব আরো জানান, প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে স্থানীয় মানুষ বিস্ময় ও উচ্ছ্বাসের সঙ্গে প্রাণ খুলে তাঁর কাছে সুখ-দুঃখের কথা বলেন। এ সময় তাঁরা তাঁদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরলে শেখ হাসিনা তাৎক্ষণিকভাবে এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।


সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলেন। সম্মেলন শেষে তিনি ছোট বোন রেহানাকে নিয়ে দাভোসে বরফের মধ্যে ছবি তোলেন। সেই ছবিটিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা হলে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রিকশাভ্যানে চড়েন। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে। 

Comments

Popular posts from this blog

ফরেইনারদের ব্যাপারে হোম আফেয়ার্স থেকে আদেশ

ফরেইনারদের ব্যাপারে হোম আফেয়ার্স থেকে আদেশ জারী হয়েছে। দোকানে দোকানে তল্লাশী হবে। কাগজ ছাড়া পেলেই ধরে ফেলবে। কারো দোকান, অফিস আদালতে কাগজ ছাড়া লোক পেলে কোনো অজুহাত শোনা হবেনা, দোকানদারকে বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে গ্রেফতার করা হবে।

ভেলকমে ডাকাতের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

আজ সন্ধ্যা ৮টা বাজে সাউথ আফ্রিকার ফ্রি ষ্টেটের ভেলকমে ডাকাতের গুলিতে  শাকিল নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। জানা যায় শাকিল তখন দোকানের কাউন্টারে অবস্থান করছিলেন। সে সময় একদল ডাকাত হানা দেয় দোকানে। নিহত শাকিল শাকিল কাউন্টার থেকে সব টাকা দিয়ে দেয় ডাকাতদের কিন্তু টাকা দেওয়ার পরেও ডাকাত দল তাকে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে শাকিল ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তিনি গত এক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে সাউথ আফ্রিকায় আসে। তার গ্রামের বাড়ি ফেনী দাগনভূঞা।

প্রধানমন্ত্রীর নামে ফেসবুকে নকল ৭৫২ আইডি বন্ধ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে খোলা ৭৫২টি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টসহ মোট ১৩৩২টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)। গত কয়েকদিনে এসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। এনটিএমসির দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গত বছরের ১৯ আগস্ট দৈনিক যোগফলের সম্পাদক আসাদুল্লাহ বাদল একটি পর্যবেক্ষণ মূলক প্রতিবেদন লিখে প্রকাশ করেছিলেন যোগফলে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অনেক নেতাকর্মীরাও এসব নকল আইডিতে দেওয়া পোস্ট শেয়ার করতেন। এনটিএমসি জানিয়েছে, একটি সংঘবদ্ধ কুচক্রী মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন গুজব সৃষ্টি ও অপপ্রচারের মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে এবং ব্যক্তিগত সুবিধা হাসিলের উদ্দেশে দুষ্কৃতিকারীরা বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সংস্থার নামে ভুয়া আইডি ও পেজ খুলে ক্রমাগত অপপ্রচার চালিয়ে আসছিল। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারবর্গের নামে ভুয়া আইডি/ পেজ খুলে মিথ্যা ও মানহানিকর প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দেশ ও বিদেশে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্নের অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। ফেসবুকে গুজব ও অপপ্রচার রোধে ন্যাশনাল টেলিকমিউন...