কানাডার কুইবেক সিটির একটি মসজিদে নামাযরত মুসলমানদের উপর আকস্মিক একদল বন্দুকধারীদের হামলায় ঘটনাস্থলেই অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার রাত আটটার দিকে কিউবেক সিটি ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
ঐ হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন প্রায় ২৫ জন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করছে স্থানীয়রা। হামলাকারীরা মসজিদ প্রাঙ্গনে পলিথিনে মোড়ানো একটি শুকরের মাথা ও একটি সতর্কতা নোট রেখে গেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গুলির ঘটনার পর মসজিদ এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ।
সিবিসি নিউজকে দেয়া তাতক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় মসজিদে নামাযরত প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন জানিয়েছেন, আকস্মিক নামাযের মধ্যেই দুজন মুখোশধারী গুলি করতে করতে ভেতরে ঢুকে পড়ে। নামায বাদ দিয়েই আমি যখনি পেছনে তাকাই ঠিক সেই মুহুর্তে একটি বুলেট প্রচন্ড শদে আমার কানের কাছ দিয়ে চলে যায়। আতংকিত হয়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। ঐ ব্যক্তি জানিয়েছে তার পাশেই নামাযের কাতারে দাঁড়ানো এক তিন-চারবছরের শিশু তার বাবার সাথে নামাযে এসেছিলো। শিশুটি ও তার বাবা দুজনেই বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, রোববার রাত আটটার দিকে এশার নামায আদায়ের সময় আকস্মিক তিন বন্দুকধারী মসজিদে নামাযরত প্রায় ৪০ জনের ওপর নির্বিচারে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলে ও হাসপাতালে নেবার পথে মৃত্যু হয় সাতজনের। মৃতদের তালিকায় আছে বাবার সাথে নামায পড়তে আসা মাত্র তিনবছরের একটি শিশুও !
হামলা চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রথমে পালিয়ে যায় বন্দুকধারী হামলাকারীরা। তবে কি উদ্দেশ্যে এই হামলা সে ব্যপারে স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি বলে জানিয়েছে গনমাধ্যম।
হামলার শিকার মসজিদ কমিটির প্রেসিডেন্ট মোহামেদ ইয়াংগুই বিস্ময় প্রকাশ করে তাৎক্ষনিক দেয়া এক টুইটে এই ঘটনাকে বর্বরতা উল্লেখ করেছেন। টুইটে দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপে হামলাকারীদের খুজে বের করে শাস্তির দাবীও জানান তিনি।
কানাডার জননিরাপত্তা মন্ত্রী, রালফ গুডালে এক টুইটারে বলেন, তিনি গভীরভাবে মর্মাহত।
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো টুইটারে মসজিদের ওপর কাপুরুষোচিত হামলায় নিহতদের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ আজ রাতে, কানাডার মানুষ এই কিউবেক মসজিদে হওয়া এই হামলায় নিহতদের উদ্দেশ্যে শোক পালন করবে। এই হামলায় নিহত ও তাদের পরিবারের জন্য আমার সমবেদনা।’
এই ঘটনার পর পুরো কানাডা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
Comments
Post a Comment