Skip to main content

ইসলাম গ্রহনের পর যা বললেন বিখ্যাত ভাষা বিজ্ঞানী



ডক্টর আবদুল করিম জারমানুস (১৮৮৪-১৯৭৯) ছিলেন একজন প্রাচ্যবিদ ও ভাষা বিশেষজ্ঞ। ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা করতে গিয়ে এই ধর্মের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

ইসলামকে একটি উগ্র ও হিংস্র ধর্ম হিসেবে তুলে ধরাসহ এই মহান ধর্ম সম্পর্কে নানা অপপ্রচার চালিয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে খোদাদ্রোহী ও কায়েমি স্বার্থবাদী মহল। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই মহান ধর্ম একটি সত্য ও অকৃত্রিম ধর্ম হিসেবে চিন্তাশীল এবং সত্য-পিপাসু অমুসলিমদেরকে আকৃষ্ট করছে। কারণ ইসলাম হচ্ছে মানুষের প্রকৃতির ধর্ম। আর তাই ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রোপাগান্ডা বুমেরাং হচ্ছে। অর্থাৎ ইসলামের প্রতি মানুষের আকর্ষণ আগের চেয়েও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে পাশ্চাত্যের শিক্ষিত ও বুদ্ধিজীবী সমাজসহ সাধারণ জনগণ এইসব অপপ্রচারের ফলে ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা করতে উদ্যোগী হচ্ছেন। আর এভাবে গবেষেণা করতে গিয়ে ইসলাম সম্পর্কে এবং মুসলিম জাতিগুলোর চিন্তা, বিশ্বাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাচ্ছেন। ফলে তারা বুঝতে পারছেন যে মুসলমানরা উগ্র নয় এবং তাদের ধর্ম ইসলামও শান্তি ও মানবাধিকার রক্ষায় বিশ্বাসী। নও-মুসলিম ডক্টর 'আবদুল করিম জারমানুস' এ প্রসঙ্গে বলেছেন:

"আমি যৌবনে ভাবতাম যে মুসলমানরা খুবই উগ্র ও অসহিষ্ণু স্বভাবের। তাদের মুখোমুখি হলে তারা আমার ক্ষতি করবে অথবা আমাকে হত্যা করবে। মুসলমানদের বদ স্বভাব সম্পর্কে বহু অদ্ভুত গাল-গল্প প্রচার করা হতো। হাঙ্গেরি থেকে একবার বসনিয়ায় গিয়েছিলাম। সেখানে মুসলিম অধ্যুষিত একটি অঞ্চলের এক কফি-হাউজে ঢুকেছিলাম। সেখানে প্রবেশ করা মাত্রই মুসলমানরা যে অপূর্ব আন্তরিক আতিথেয়তা দেখাল তাতে আমি বিস্মিত হয়ে পড়ি। তাদের প্রতিটি আচরণ ছিল বন্ধুত্ব, ভালোবাসা ও বিনম্রতায় ভরপুর। তারা খুব দয়াদ্রচিত্তে আমাকে তাদের বাড়ীতে বেড়ানোর আমন্ত্রণ জানাল ও বেশ ভালোভাবে আপ্যায়ন করল। আমি ওই বসনীয় মুসলমানদের বাড়ীতে বেশ নিরাপত্তা অনুভব করছিলাম। আর এ থেকেই আমি নিশ্চিত হলাম যে, মুসলমানরা বেশ শান্ত স্বভাবের মানুষ ও তারা অযৌক্তিক আচরণ করেন না। ফলে আমি দেখলাম যে মুসলমানদের সম্পর্কে যা বলা হতো বাস্তবে তারা ছিলেন সেসবের ঠিক বিপরীত।

মুসলমানদের সঙ্গে সরাসরি ও প্রথমবারের মত মেলামেশায় তাদের বাস্তব পরিচয় পেয়ে ইসলাম সম্পর্কেও উতসাহী হয়ে ওঠেন জারমানুস। ফলে তিনি শুরু করেন ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা। গবেষণায় জারমানুস অনেক সত্য খুঁজে পান। যে বিষয়টি তাকে মুগ্ধ করেছিল তা হল সুন্দর আচরণ ও নৈতিক গুণগুলো অর্জনের জন্য ইসলামের গুরুত্ব আরোপ। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, পছন্দনীয় বা উত্তম চরিত্রকে পরিপূর্ণতা দেয়ার জন্যই আমাকে (সর্বশেষ নবী হিসেবে) পাঠানো হয়েছে। আর এ থেকেই বোঝা যায়, সুস্থ জীবনের জন্য ইসলাম উন্নত নৈতিক গুণ অর্জনকে কত বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বর্তমান বিশ্বের অনেক সংকটের মূল হল মানুষের সম্মান বা মর্যাদাকে উপেক্ষা করা এবং নৈতিক নীতিমালা ও চরিত্রকে বিস্মৃত হওয়া। জারমানুস এ প্রসঙ্গে বলেছেন:

গবেষণা ও পড়াশোনা করে দেখলাম ইসলাম সুন্দর আচরণ, আদব-কায়দা, ভদ্রতা ও নম্রতার ধর্ম। মানুষের জীবনের সব দিকের জন্য ইসলামের বিধি-বিধান বা দিক-নির্দেশনা এবং কর্মসূচি থাকলেও অন্যদের সঙ্গে আচার-আচরণ ও লেনদেনে ভদ্রতা-নম্রতা বা সুন্দর আচার-আচরণের ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে।

সুন্দর চরিত প্রসঙ্গে বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, যে বিষয়টি আমার উম্মতকে বেহেশতে নেয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখবে তা হল হল আল্লাহর ভয় ও সুন্দর স্বভাব বা চরিত্র।

জারমানুস ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা করতে গিয়ে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)'র সর্বোত্তম আচার-আচরণ ও স্বভাবে মুগ্ধ হয়েছেন। এই মহান ব্যক্তিত্ব তাঁর কথা ও আচার-আচরণের মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে সুন্দর স্বভাবের বিকাশ ঘটিয়েছিলেন। এ ধরনের সুন্দর স্বভাবের কারণেই বহু মানুষ ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে। পবিত্র কুরআনও ইসলামের অগ্রগতিতে বিশ্বনবী (সা.)'র সুন্দর স্বভাব বা আচরণের ভূমিকার কথা তুলে ধরে বলেছে: "হে আমাদের রাসূল! আল্লাহর দয়া ও করুণা ছিল বলেই তুমি মানুষের প্রতি দয়াদ্র বা সদয় থেকেছ, তুমি যদি রুক্ষ ও কঠোর স্বভাবের হতে তাহলে মানুষ তোমার কাছ থেকে দূরে সরে পড়ত। তাই তুমি তাদের ক্ষমা কর ও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং কাজে-কর্মে তাদের সঙ্গে পরামর্শ কর।" (সুরা আলে ইমরান-১৫৯(

এই আয়াত থেকে এটা স্পস্ট যে, সহিষ্ণুতা ও সুন্দর আচরণ এবং সৎ-স্বভাব এক খোদায়ী উপহার। তাই মানুষের ওপর নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের মন জয় করা ও তাদের ওপর স্নেহশীল হওয়া জরুরি।

বিশ্বনবী (সা.) শুধু কথায় নয় বাস্তব জীবনেও ছিলেন উন্নত নৈতিক চরিত্র ও গুণের আদর্শ। তিনি সব সময় হাসি-মুখে থাকতেন এবং অন্যদের সঙ্গে হৃদয়-গ্রাহী কথা বলতেন। আর এমনটি না হলে মানুষ

Comments

Popular posts from this blog

আল হাসসা শহরের অলৌকিক পাথর

আল হাসসা, ২৬ এপ্রিল- শূন্যে ভাসে এমন পাথরের ছবি বা ভিডিও আমরা অনেকে দেখেছি। যার মধ্যে কিছু কিছু ছবি দেখেছি এডিট করা। সত্য-মিথ্যা সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। তবে লোকমুখে শোনা যায়, সৌদি আরবের আল হাসসা শহরের লাইলি-মজনুর পাহাড় বলে পরিচিত স্থানে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় দু’টি পাথর। এটি এমন পাথর যা কি না শূন্যে ভাসে- মাটি থেকে সামান্য উপরে। তবে এ পাথরের সত্যতা জানতে গিয়ে নানাজনের কাছে নানারকম তথ্য পাওয়া যায়। কারো কারো মতে, একজন মুজাহিদকে নিষ্ঠুরভাবে ওই পাথরের উপর গুলি করে মেরে ফেলা হয়। আর সেই ঘটনাটি ছিল এপ্রিল মাসের দিকে। আর তারপরই প্রতিবছর এপ্রিল মাসের নির্দিষ্ট দিনে পাথরটি আধাঘণ্টা মাটির উপর ভাসমান অবস্থায় থাকে। এর চেয়েও অবাক করা বিষয় হলো, যখন পাথরটি শূন্যে ভেসে ওঠে; তখন পাথরটির গায়ে লেগে থাকা রক্ত তাজা দেখায়। এমনকী তা উজ্জ্বল হয়ে গাঢ় বর্ণ ধারণ করে থাকে। পাথরে লেগে থাকা এই রক্ত স্থানীয়রা অনেকবার মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আবারও পাথরের গায়ে রক্ত দেখা যায়। (তবে আমি তেমন কোনো রক্ত দেখিনি) অন্যরা বলেন, ৬২১ খ্রিষ্টাব্দের এক ...

সেহরির মেন্যুতে শিশা, ইফতারির পরই শিশার ধোঁয়াই অন্ধকার রেস্টুরেন্ট!

রাত সাড়ে ৮টা, বনানীর ২৭ নম্বর সড়কের কে ব্লকের ৯নং ভবনের ‘আত্তিন’ নামের একটি এরাবিয়ান রেস্টুরেন্টে। ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল নিচতলার কক্ষগুলো ধোঁয়ায় অন্ধকার। ১৮-৩০ বছর বয়সী নারী পুরুষরা আয়েশিভাবে পায়ে পা তুলে আওয়াজ করে পান করছেন শিশা। কেউ দেখলে বিশ্বাসই করবেন না কিছুক্ষণ আগেই এখানে শেষ হয়েছে প্রথম রোজার ইফতারের আয়োজন। ইফতার শেষে খাবারের ডিশগুলো তখনো পুরোপুরি সরিয়ে ফেলতে পারেননি রেস্টুরেন্টটির কর্মীরা। এরই মধ্য বেশ কয়েকজন দেশি-বিদেশি তরুণ-তরুণী টেবিলে সিগারেটের প্যাকেট ও জুস রেখে বসে গেছেন শিশার আসরে। এরাবিয়ান এই রেস্টুরেন্টের ভেতরে ঢুকতেই এগিয়ে আসেন আনিসুর রহমান নামের এক কর্মী। তার কাছে সেহরির মেন্যু চাইলে তিনি জানান, ‘স্যার, মেন্যু নেই, শেষ হয়ে গেছে।’ তবে তিনি বলেন, ‘সাধারণত আমাদের এখানে যেসব খাবার পাওয়া যায়, সেহরির সময় সেগুলোই মিলবে। তবে ১২০০ টাকার একটি মেন্যু আছে, তাতে শিশার সঙ্গে স্যান্ডউইচ ও সফটড্রিংকস পাওয়া যাবে।’ রমজানে সেহরির সময় শিশার মেন্যু কেন জানতে চাইলে আনিসুর বলেন, ‘আসলে সেহরির জন্য এই মেন্যু না। এখানে শিশা সব সময়ই পাওয়া যায়। যারা সেহরির সময় শিশা সেবনের জন...

১৫ মার্চ বাম মোর্চার জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও

ঢাকা: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার প্রতিবাদে আহূত হরতালে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল, জলকামান ও গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। এর মধ্যে ১৫ মার্চ জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি রয়েছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা ও বাসদ-সিপিবির আহবানে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগরীতে ৬-১২টা হরতাল কর্মসূচি পালিত হয়। ভোর ৬টায় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার হরতালের মিছিল প্রেসক্লাব, নয়াপল্টন, জিরো পয়েন্ট, দৈনিক বাংলা, হাইকোর্টের কদম ফোয়ারাসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে। সমাবেশের শুরুতেই আগামী কর্মসূচি ঘোষণা করেন মোর্চার সমন্বয়ক ফিরোজ আহমেদ। কর্মসূচির মাঝে রয়েছে ১-১৫ মার্চ বিক্ষোভ পক্ষ এবং ১৫ মার্চ জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পর্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্...