Skip to main content

খেলোয়াড়দের ‘মাথা’র ওপর দিয়ে গেল পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র!



 ইউরোপা লিগের এশিয়ান সংস্করণ হলো এএফসি কাপ। এ টুর্নামেন্টের ইন্টার-জোন প্লে অফ সেমিফাইনালের ফিরতি লেগ খেলতে গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়া উড়ে গিয়েছিল বেঙ্গালুরু এফসি। ভারতীয় ক্লাবটির খেলোয়াড়েরা সেখান থেকে যে অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছেন, তা ভুলতে সময় লাগবে।

বেঙ্গালুরুর প্রতিপক্ষ ছিল উত্তর কোরিয়া সামরিক বাহিনীর ক্লাব এপ্রিল ২৫। তাদের বিপক্ষে বেঙ্গালুরু যে ভূরি ভূরি গোল খেয়েছে তা নয়, বরং ফিরতি লেগ গোলশূন্য ড্র করে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ ব্যবধানের জয়ে ভারতীয় দলটিই নিশ্চিত করেছে ইন্টার-জোন প্লে অফ ফাইনাল। কিন্তু মাঠের বাইরে বেঙ্গালুরু খেলোয়াড়েরা মুখোমুখি হয়েছিলেন ভয়ানক সব অভিজ্ঞতার। যেমন, হোটেলে থাকাকালীন তাঁদের কামরার ওপর দিয়ে ছোড়া হয়েছে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র!


সাম্প্রতিক সময়ে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে উত্তর কোরিয়ায়। কিছুদিন আগে দুই সপ্তাহের কম সময়ের ব্যবধানে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে দেশটি। বেঙ্গালুরুর অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এরিক পার্তালু জানিয়েছেন তাঁদের অভিজ্ঞতা, ‘সফরের শেষ দিনে হোটেলে আমাদের কামরার ওপর দিয়ে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না।’

প্রায় দেড় লাখ আসনবিশিষ্ট বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘মে ডে’ স্টেডিয়ামের ম্যাচ নিয়ে তাই ‘ভীষণ উদ্বিগ্ন’ ছিলেন পার্তালু। মাঠের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত উদ্বেগ দূর হলেও মাঠের বাইরে তাঁরা মোটেও স্বস্তিতে ছিলেন না। সেটা দেশটি সফরের শুরু থেকেই। পিয়ংইয়ং বিমানবন্দরে নেমেই চমকে গিয়েছিলেন পার্তালু। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলেও বিমান অবতরণ করেছে মাত্র একটি! বেঙ্গালুরুর খেলোয়াড়েরা বিমানবন্দরে অবতরণের পরদিনের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল ইমিগ্রেশন অফিসার আর দোকানকর্মীদের। এ কারণে বিমানবন্দরের ভেতরেই অন্ধকারের মধ্যে খেলোয়াড়দের অপেক্ষা করতে হয়েছে টানা দুই ঘণ্টা! কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় নিভিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিমানবন্দরের বাতি।

ইমিগ্রেশন পাড়ি দেওয়ার সময় তাঁদের মোবাইল ফোন ও ট্যাব পরীক্ষা করেছেন বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা—কোনো ছবি তোলা হয়েছে কি না, তা দেখার জন্য। উত্তর কোরিয়ায় বহির্বিশ্বের নাগরিকেরা চাইলেও সব জায়গার ছবি তুলতে পারবেন না। এ সময় খেলোয়াড়দের ব্যাগ তল্লাশি করা হয় এবং তাঁদের ছবি তোলার ব্যাপারেও সাবধান করে দেওয়া হয়।

উত্তর কোরিয়ায় যাওয়ার আগে দেশটির সর্বোচ্চ প্রশাসনিক নেতা কিম জং-উনকে নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটারে নানা রকম মজা করেছিলেন বেঙ্গালুরুর খেলোয়াড়েরা। দেশটিতে পা রাখার আগে তাঁদের বলা হয়েছিল, এ ধরনের যেকোনো খুদে বার্তা মুছে ফেলার জন্য। নইলে বিপদ হতে পারে। পার্তালু বলেন, ‘মজার ব্যাপার হলো, উত্তর কোরিয়া নিয়ে বেশ কিছু মজার “মেমেস” আমরা পেয়েছি হোয়াটসঅ্যাপে, যেখানে কিম জং-উনকে নিয়ে রসিকতা করা হয়েছে। উড়াল দেওয়ার আগে এসব খুদে বার্তা মুছে ফেলতে বলা হয়েছিল আমাদের। আশায় ছিলাম, ওঁরা হয়তো টুইটার ব্যবহার করে না, কারণ, আমি টুইটারে কিমের সঙ্গে দেখা করে একসঙ্গে পান করা নিয়ে রসিকতা করেছি।’

বিমানবন্দরে ট্রানজিটের সময় বেঙ্গালুরুর বেশ কিছু খেলোয়াড়ের ব্যাগ হারিয়েছে। এসব ব্যাগে তাঁদের খেলার সরঞ্জাম ছিল। অগত্যা হোটেলের দোকান থেকে চড়া দামে (১৫০-২০০ ডলার) তাঁদের বুট কিনতে হয়েছে। পার্তালুর মতে, এগুলো ছিল ‘নকল বুট’! তবে ম্যাচের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে উত্তর কোরিয়ায় নামার পর প্রথম অনুশীলন শেষে খেলার সরঞ্জাম ফেরত পেয়েছেন বেঙ্গালুরুর খেলোয়াড়েরা।

ব্যাগ হারানো ও ফিরে পাওয়া প্রসঙ্গে পার্তালুর ভাষ্য, ‘প্রথম অনুশীলনের জন্য আমাদের কোনো বুট কিংবা বল ছিল না। এ জন্য সস্তা বুট কিনে কাজ চালিয়ে নিতে হয়েছে, যেগুলোর মাপ ঠিক ছিল না। পেশাদার পরিবেশে আপনি এমনটা আশা করতে পারেন না। অবশ্য প্রথম অনুশীলন শেষে হোটেলে ফিরে দেখি সবকিছু ফেরত পেয়েছি!’

শুধু ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা নয়, খেলোয়াড়েরা ফোন পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেননি! ছিল না ইন্টারনেট সুবিধাও। নিরাপত্তায় দেশটির অত্যধিক কড়াকড়ি নিয়ে পার্তালুর অভিজ্ঞতাটা এ রকম, ‘আমরা হোটেলে পৌঁছেছি সন্ধ্যার প্রাক্কালে। সবাই অবাক হয়ে দেখলাম রাস্তার বাতিগুলো তখনো জ্বলেনি। কেউ একজন আমাকে বলল, স্যাটেলাইট থেকে পিয়ংইয়ংকে যেন না দেখা যায়, সে জন্যই এ ব্যবস্থা।’

বেঙ্গালুরুর খেলোয়াড়েরা হোটেল থেকে একা বের হতে পারেননি। যেখানেই গেছেন সঙ্গে ‘গাইড’ ছিল। পিয়ংইয়ংয়ের রাস্তায় তাঁদের আগ্রহী চোখে দেখেছে সাধারণ নাগরিকেরা। সবার পোশাকেই দেশের পতাকা কিংবা শাসক পরিবারের ছবি-সংবলিত পিন-ব্যাজ দেখেছেন পার্তালু, ‘ওদের চোখে চোখ পড়লেই দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিয়েছে। যেন তাকানোটা ঠিক হয়নি। সবাইকে পোশাকের ওপর পতাকা কিংবা শাসক পরিবারের ছবি-সংবলিত পিন-ব্যাজ পরতে হয়। তবে ওরা কিন্তু বন্ধুভাবাপন্ন। কিছু জিজ্ঞেস করলে হেসে

Comments

Popular posts from this blog

ফরেইনারদের ব্যাপারে হোম আফেয়ার্স থেকে আদেশ

ফরেইনারদের ব্যাপারে হোম আফেয়ার্স থেকে আদেশ জারী হয়েছে। দোকানে দোকানে তল্লাশী হবে। কাগজ ছাড়া পেলেই ধরে ফেলবে। কারো দোকান, অফিস আদালতে কাগজ ছাড়া লোক পেলে কোনো অজুহাত শোনা হবেনা, দোকানদারকে বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে গ্রেফতার করা হবে।

মধ্যরাতে কণ্ঠশিল্পী আসিফ গ্রেপ্তার

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। রাত দুইটার দিকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন আরেক জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিন। তার করা একটি মামলাতেই গ্রেপ্তার হন আসিফ। জানা যায়, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিনের দায়ের করা তেজগাঁও থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে। এ বিষয়ে শফিক তুহিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি আগামিকাল(বুধবার) কথা বলবেন বলে জানান। এ বিষয়ে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী শফিক তুহিনের দায়ের করা তেজগাঁও থানার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছেে। মামলায় আসিফ আকবর ছাড়াও আরও ৪/৫ জন অজ্ঞাত আসামির নাম রয়েছে। আসিফকে শিগগির আদালতে সোপর্দ করা হবে।

দ‌ক্ষিণ আ‌ফ্রিকায় অ‌ভিবা‌সী বি‌রোধী সমা‌বেশ

নুৃরুল আলম, দক্ষিণ আফ্রিকা: দ‌ক্ষিণ আ‌ফ্রিকায় অ‌ভিবাসী বি‌রোধী সমা‌বে‌শের ডাক দি‌য়ে‌ছে প্রি‌টো‌রিয়ার ‘মা‌মে‌লো‌ডি স‌চেতন নাগ‌রিক’। অ‌বৈধ অ‌ভিবাসী‌দের দেশ‌ থে‌কে বের ক‌রে দেয়ার দা‌বি‌তে আগা‌মি ২৪ ফেব্রুয়া‌রি শুক্রবার এ সমা‌বে‌শের ডাক দি‌য়ে‌ছে সংগঠন‌টি। স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় সি‌টি হ‌লে সমা‌বেশ‌টি হ‌বে। সমাবেশে স্থানীয় আফ্রিকানদের অংশগ্রহণ বাড়াতে গত  একমাস ধরে তারা লিফলেট বিতরণ ও বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে। ওই লিফলেটে বলা হয়েছে, এই সমাবেশ হচ্ছে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে এবং ওই সকল কোম্পানী ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যারা জিম্বাবুয়েসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের চাকরীর ব্যবস্থা করেছে। যেখানে চাকরী করার কথা ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকানদের। ওই লিফলেটে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন ক্যাশ এন্ড ক্যারি,  নানদোস, কেএফসি, স্পার, শপরাইটসহ বড় প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে জিম্বাবুয়েসহ  (পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া) বিভিন্ন দেশের নাগরিক। স্থানীয়রা মনে করে, বিদেশী নাগরিকরা তাদের চাকরী কেড়ে নিয়েছে। ফলে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তারা প্রশ্ন তুলেছে,  নাইজেরিয়া, জিম্বাবুয়ে, পাকিস্তানসহ আরো বিভিন্...