Skip to main content

জীবিকার সন্ধানে প্রবাসে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরল আনোয়ার


অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে ধার দেনা করে প্রায় সাত মাস আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন মন্ডল (৪০)। সেখানে গিয়ে কাজ না পেয়ে প্রায় চার মাস বেকার বসে থাকার পর গত জুলাই মাসে একটি চাকরি জোটে তার। স্বপ্ন দেখেন সুন্দর ভবিষ্যতের। চাকরিতে ঢুকেই স্ত্রীকে ফোন করে বলেছিলেন, খুব দ্রুতই পাওনাদারদের টাকা পরিশোধের জন্য টাকা পাঠাবেন। ছেলে-মেয়েদের ভাল স্কুলে পড়াশুনা করাবেন। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল তার সব স্বপ্ন।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের জগতলা কান্দিপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে আনোয়ার জীবন-জীবিকার সন্ধানে সৌদি আরবে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন।
শুক্রবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে নিহত আনোয়ারের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। বৃদ্ধ বাবা সন্তানের নিথর দেহ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে যান। স্ত্রী লাশের পাশে বার বার ছুটে যাচ্ছেন প্রিয় মানুষের মুখখানা একবার দেখার জন্য। বারবার মূর্ছা যান তিনি। সন্তান দুটি কাঁদছেন অঝোর ধারায়। উপস্থিত সবাই তাদের কি সান্তনা দিবে। কেউ কোন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না।
এর আগে শুক্রবার ভোরে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে নিহত আনোয়ারের কফিন গ্রহণ করেন ছোট ভাই আজাদ হোসেন। শুক্রবার বিকেলে আনোয়ারের মৃতদেহ বাড়িতে আসছে এমন সংবাদ গ্রামে পৌঁছালে শত শত শোকার্ত মানুষ আগে থেকেই বাড়িতে গিয়ে ভিড় করতে থাকে।
নিহতের ছোট ভাই আজাদ হোসেন জানান, আমরা চার ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ার মেজ। জীবিকার সন্ধানে গত সাত মাস আগে তার চাচাতো ভাই হাবিবুর রহমানের মাধ্যমে সৌদির রাজধানী রিয়াদে পাড়ি জমান। গত দুইমাস পূর্বে রিয়াদ থেকে ৪২০ কিঃ মিঃ দূরে হাবুব এলাকায় আল-আলাইদ কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন।
রাস্তার পাশে কর্মস্থলে কাজ করার সময় একটি দ্রুত গতির গাড়ি তাকে চাপা দিলে গুরুতর আহত হন। সঙ্গে সঙ্গে দেশটির পুলিশ তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরের দিন সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আনোয়ার হোসেন। বহু প্রতিক্ষার পরে দির্ঘ ২ মাস পরে শুক্রবার ভোরে দেশে আসে ভাইয়ের লাশ। সেখান থেকে বিকেলে অ্যাম্বুলেন্সে করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসি।

Comments

Popular posts from this blog

আল হাসসা শহরের অলৌকিক পাথর

আল হাসসা, ২৬ এপ্রিল- শূন্যে ভাসে এমন পাথরের ছবি বা ভিডিও আমরা অনেকে দেখেছি। যার মধ্যে কিছু কিছু ছবি দেখেছি এডিট করা। সত্য-মিথ্যা সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। তবে লোকমুখে শোনা যায়, সৌদি আরবের আল হাসসা শহরের লাইলি-মজনুর পাহাড় বলে পরিচিত স্থানে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় দু’টি পাথর। এটি এমন পাথর যা কি না শূন্যে ভাসে- মাটি থেকে সামান্য উপরে। তবে এ পাথরের সত্যতা জানতে গিয়ে নানাজনের কাছে নানারকম তথ্য পাওয়া যায়। কারো কারো মতে, একজন মুজাহিদকে নিষ্ঠুরভাবে ওই পাথরের উপর গুলি করে মেরে ফেলা হয়। আর সেই ঘটনাটি ছিল এপ্রিল মাসের দিকে। আর তারপরই প্রতিবছর এপ্রিল মাসের নির্দিষ্ট দিনে পাথরটি আধাঘণ্টা মাটির উপর ভাসমান অবস্থায় থাকে। এর চেয়েও অবাক করা বিষয় হলো, যখন পাথরটি শূন্যে ভেসে ওঠে; তখন পাথরটির গায়ে লেগে থাকা রক্ত তাজা দেখায়। এমনকী তা উজ্জ্বল হয়ে গাঢ় বর্ণ ধারণ করে থাকে। পাথরে লেগে থাকা এই রক্ত স্থানীয়রা অনেকবার মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আবারও পাথরের গায়ে রক্ত দেখা যায়। (তবে আমি তেমন কোনো রক্ত দেখিনি) অন্যরা বলেন, ৬২১ খ্রিষ্টাব্দের এক ...

সেহরির মেন্যুতে শিশা, ইফতারির পরই শিশার ধোঁয়াই অন্ধকার রেস্টুরেন্ট!

রাত সাড়ে ৮টা, বনানীর ২৭ নম্বর সড়কের কে ব্লকের ৯নং ভবনের ‘আত্তিন’ নামের একটি এরাবিয়ান রেস্টুরেন্টে। ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল নিচতলার কক্ষগুলো ধোঁয়ায় অন্ধকার। ১৮-৩০ বছর বয়সী নারী পুরুষরা আয়েশিভাবে পায়ে পা তুলে আওয়াজ করে পান করছেন শিশা। কেউ দেখলে বিশ্বাসই করবেন না কিছুক্ষণ আগেই এখানে শেষ হয়েছে প্রথম রোজার ইফতারের আয়োজন। ইফতার শেষে খাবারের ডিশগুলো তখনো পুরোপুরি সরিয়ে ফেলতে পারেননি রেস্টুরেন্টটির কর্মীরা। এরই মধ্য বেশ কয়েকজন দেশি-বিদেশি তরুণ-তরুণী টেবিলে সিগারেটের প্যাকেট ও জুস রেখে বসে গেছেন শিশার আসরে। এরাবিয়ান এই রেস্টুরেন্টের ভেতরে ঢুকতেই এগিয়ে আসেন আনিসুর রহমান নামের এক কর্মী। তার কাছে সেহরির মেন্যু চাইলে তিনি জানান, ‘স্যার, মেন্যু নেই, শেষ হয়ে গেছে।’ তবে তিনি বলেন, ‘সাধারণত আমাদের এখানে যেসব খাবার পাওয়া যায়, সেহরির সময় সেগুলোই মিলবে। তবে ১২০০ টাকার একটি মেন্যু আছে, তাতে শিশার সঙ্গে স্যান্ডউইচ ও সফটড্রিংকস পাওয়া যাবে।’ রমজানে সেহরির সময় শিশার মেন্যু কেন জানতে চাইলে আনিসুর বলেন, ‘আসলে সেহরির জন্য এই মেন্যু না। এখানে শিশা সব সময়ই পাওয়া যায়। যারা সেহরির সময় শিশা সেবনের জন...

১৫ মার্চ বাম মোর্চার জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও

ঢাকা: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার প্রতিবাদে আহূত হরতালে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল, জলকামান ও গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। এর মধ্যে ১৫ মার্চ জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি রয়েছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা ও বাসদ-সিপিবির আহবানে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগরীতে ৬-১২টা হরতাল কর্মসূচি পালিত হয়। ভোর ৬টায় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার হরতালের মিছিল প্রেসক্লাব, নয়াপল্টন, জিরো পয়েন্ট, দৈনিক বাংলা, হাইকোর্টের কদম ফোয়ারাসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে। সমাবেশের শুরুতেই আগামী কর্মসূচি ঘোষণা করেন মোর্চার সমন্বয়ক ফিরোজ আহমেদ। কর্মসূচির মাঝে রয়েছে ১-১৫ মার্চ বিক্ষোভ পক্ষ এবং ১৫ মার্চ জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পর্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্...