Skip to main content

৩০ হাজার টাকার সোলার ৫৬ হাজার টাকা!

সোলার প্যানেল বসানোর নামে সরকারি বরাদ্দের টাকা লুটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ইডকল) বিরুদ্ধে। কোম্পানিটি অতিরিক্ত অর্থ নিয়েও নিম্নমানের সোলার বসাচ্ছে। এ ঘটনায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিটির সদস্যরা। তারা বলেন, বাজারে একটি সোলার প্যানেলের মূল্য ৩০ হাজার টাকা হলেও এই কোম্পানি নিচ্ছে ৫৬ হাজার টাকা। ইডকলের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে কমিটির কোনো কোনো সদস্য এ প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু আমাদের সময়কে বলেন, ইডকলের মাধ্যমে সোলার প্যানেল বসানোর বিষয়ে কমিটির কয়েকজন সদস্য আপত্তি জানিয়েছেন। মূল্য ও কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কোম্পানির কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কোম্পানিকে সোলারের মূল্য নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সূত্র জানায়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প (টিআর ও কাবিটা) বরাদ্দের ৫০ শতাংশ সোলার প্যানেল (সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে) বসানোর কাজে ব্যয় করা বাধ্যতামূলক। এ সোলার প্যানেল বসানোর দায়িত্ব পায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইডকল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সোলারের অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে। এ ছাড়া সোলারের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির ১৫তম বৈঠকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে টিআর ও কাবিটা কর্মসূচির ৫০ শতাংশ সোলার প্যানেল স্থাপনে ব্যয় করার বিষয়ে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়। এ সময় কমিটির সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক এমপি বলেন, ইডকল সোলার প্যানেল স্থাপনের কাজ করছে তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু বাজারে যে মূল্য আছে, সেই অনুযায়ী করতে হবে। তাতে বেশি জায়গায় সোলার প্যানেল স্থাপন করা যাবে। বেশি মূল্য দিয়ে ইডকলের নিয়োগকৃত এনজিওর মাধ্যমে বাস্তবায়ন কতটুকু যৌক্তিক হবে তা ভাবতে হবে। বেশি টাকা ব্যয় করে নিম্নমানের কাজ করব কেন? কমিটির সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, যেখানে বাজারে সমমানের কাজটি ৩০ হাজার টাকায় করা যায়, সেখানে ইডকল করে ৫৬ হাজার টাকায়। সরকারি ব্যয়ের একটি জবাবদিহিতা আছে। বিগত বছর সোলার প্যানেলে আমি কোনো টাকা ব্যয় করিনি। প্রায় দেড় কোটি টাকা ফেরত গেছে। কারণ নিম্নমানের কাজ করলে জনগণের কাছে আমাকে জবাবদিহি করতে হবে। বেশি মূল্য দিয়ে নিম্নমানের কোনো সোলার প্যানেল প্রতিষ্ঠা করা হবে না। প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে স্বতন্ত্র কোনো এনজিও নির্বাচন করে বাস্তবায়ন করব। শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি বলেন, আমার এলাকায় নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। ইডকল বিদেশি দাতা সংস্থার মাধ্যমে আমাদের দেশের গরিব জনগণের বিপুল টাকা লুটে নিচ্ছে। কিস্তির টাকা সময়মতো পরিশোধে ব্যর্থ হলে পল্লী বিদ্যুতের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ইডকল সরকার অনুমোদিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। তারা মন্ত্রণালয় এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে দেশের দরিদ্র জনগণের কোটি কোটি টাকা লোপাট করে নিচ্ছে। পরে কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ইডকলের বিষয়ে একটি স্বতন্ত্র এজেন্ডা নির্ধারণের মাধ্যমে পরবর্তী বৈঠকে ইডকল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আলোচনা করা যেতে পারে। কমিটির সদস্য বিএম মোজাম্মেলক হক ওই প্রস্তাব সমর্থন করেন। বৈঠকে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় রোধে এবং অধিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সোলার প্যানেল স্থাপন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার সুপারিশ করা হয়। আগামী বৈঠকেও এ বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

Comments

Popular posts from this blog

ফরেইনারদের ব্যাপারে হোম আফেয়ার্স থেকে আদেশ

ফরেইনারদের ব্যাপারে হোম আফেয়ার্স থেকে আদেশ জারী হয়েছে। দোকানে দোকানে তল্লাশী হবে। কাগজ ছাড়া পেলেই ধরে ফেলবে। কারো দোকান, অফিস আদালতে কাগজ ছাড়া লোক পেলে কোনো অজুহাত শোনা হবেনা, দোকানদারকে বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে গ্রেফতার করা হবে।

ভেলকমে ডাকাতের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

আজ সন্ধ্যা ৮টা বাজে সাউথ আফ্রিকার ফ্রি ষ্টেটের ভেলকমে ডাকাতের গুলিতে  শাকিল নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। জানা যায় শাকিল তখন দোকানের কাউন্টারে অবস্থান করছিলেন। সে সময় একদল ডাকাত হানা দেয় দোকানে। নিহত শাকিল শাকিল কাউন্টার থেকে সব টাকা দিয়ে দেয় ডাকাতদের কিন্তু টাকা দেওয়ার পরেও ডাকাত দল তাকে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে শাকিল ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তিনি গত এক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে সাউথ আফ্রিকায় আসে। তার গ্রামের বাড়ি ফেনী দাগনভূঞা।

প্রধানমন্ত্রীর নামে ফেসবুকে নকল ৭৫২ আইডি বন্ধ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে খোলা ৭৫২টি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্টসহ মোট ১৩৩২টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)। গত কয়েকদিনে এসব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। এনটিএমসির দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গত বছরের ১৯ আগস্ট দৈনিক যোগফলের সম্পাদক আসাদুল্লাহ বাদল একটি পর্যবেক্ষণ মূলক প্রতিবেদন লিখে প্রকাশ করেছিলেন যোগফলে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত অনেক নেতাকর্মীরাও এসব নকল আইডিতে দেওয়া পোস্ট শেয়ার করতেন। এনটিএমসি জানিয়েছে, একটি সংঘবদ্ধ কুচক্রী মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন গুজব সৃষ্টি ও অপপ্রচারের মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে এবং ব্যক্তিগত সুবিধা হাসিলের উদ্দেশে দুষ্কৃতিকারীরা বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সংস্থার নামে ভুয়া আইডি ও পেজ খুলে ক্রমাগত অপপ্রচার চালিয়ে আসছিল। এমনকি প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারবর্গের নামে ভুয়া আইডি/ পেজ খুলে মিথ্যা ও মানহানিকর প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দেশ ও বিদেশে সরকারের সুনাম ক্ষুণ্নের অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। ফেসবুকে গুজব ও অপপ্রচার রোধে ন্যাশনাল টেলিকমিউন...