হাওরে খাদ্য, আশ্রয় ও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। এ মুহূর্তে ৯০ লাখেরও বেশি মানুষ বিভিন্ন সংকটের মোকাবিলা করছে বলে যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্ট্যাডিজ (সিএনআরএস), হাওরবিষয়ক উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জোট হাওর অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্ম (হ্যাপ) ও নাগরিক সংগঠনগুলো। তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে (২৭ এপ্রিল) হাওরাঞ্চলে খাদ্যাভাবের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের উচিত উপদ্রুত অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে দুর্গতদের পুনর্বাসনে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া। অবশ্য নতুন ধান না আসা পর্যন্ত সরকার খাদ্য ও অর্থ সহায়তা দিয়ে যাবে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। হাওর এলাকার অকাল বন্যার নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষতি কাটাতে কমপক্ষে ৫ বছর সময় লেগে যেতে পারে। বর্তমানে ওইসব এলাকায় পানির দামে গবাদি পশু বিক্রি হচ্ছে। অভাবে পড়ে জমি বেচতে চাইলেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। টিকে থাকার অন্য কোনো অবলম্বন না থাকায় বাস্তুভিটা ছেড়ে চলে যাচ্ছে মানুষ। আর্থিক সংকটে পড়ে হতদরিদ্ররা কৃষিকাজে ন্যূনতম বিনিয়োগ করার মতোও পুঁজিও পাচ্ছে না। এদিকে হাওর এলাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে বিস্তর ব্যবধান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকারের সর্বশেষ (২৮ এপ্রিল) পরিসংখ্যানে হাওরাঞ্চলের ৬ জেলায় ২ লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ফসল ও ৮ লাখ ৫০ হাজার ৮৮টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে বলা হয়। সিএনআরএস ও হ্যাপ তাদের সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৮১ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং ৯০ লাখেরও বেশি দুর্গত মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে। খাদ্যাভাবের কারণে পরিস্থিতি বর্তমানে এমন পর্যায়ে ঠেকেছে, কৃষকরা অর্ধেক দামে গবাদি পশু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব এলাকায় বর্তমানে গোখাদ্যের তীব্র সংকট। ঢাকায় বসবাসরত ওই এলাকার বাসিন্দারা গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে জানান, চলতি বছর বন্যায় হাওরের ৭ জেলায় শুধু ১৩ হাজার কোটি টাকার ইরি-বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া হাওরবাসীদের পুনর্বাসনে খাদ্যশস্য বিতরণের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ১০০ দিনের কর্মসূচি শুরু করেছেন। মন্ত্রী বলেন, বন্যা প্লাবিত এ এলাকার মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষকদের পুনর্বাসনে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যেসব কৃষক কৃষি লোন তুলে ধান চাষ করেছিলেন তাদের ১ বছর ঋণ পরিশোধ স্থগিত থাকবে। একইভাবে আগামী ১ বছর ঋণের কিস্তি স্থগিত রাখতে এনজিওদের প্রতি আহ্বান জানান। হাওর অ্যাডভোকেসি প্লাটফর্মের হাওরবিষয়ক সর্বশেষ প্রতিবেদনের সমন্বয়কারী আনিসুল ইসলাম গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, এ বিপর্যয়ের একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে। এ বিপর্যয়ের পেছনের কুশীলবদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে এর পুনরাবৃত্তি হবেই। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা আমরা আগেই করেছিলাম। বন্যাকবলিত ৭ জেলায় গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ৫ হাজার ৮১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে হ্যাপের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ৩ লাখ ৭১ হাজার ৩৮১ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে বলেও জানানো হয়। এর মধ্যে সিলেটে ৩৪ হাজার ৫৩৬ হেক্টর ফসলি জমি, সুনামগঞ্জে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬১২ হেক্টর, নেত্রকোনায় ৬৯ হাজার ৭১০ হেক্টর, হবিগঞ্জে ৩৫ হাজার ৩২৫ হেক্টর, মৌলভীবাজারে ১৯ হাজার ১১১ হেক্টর, কিশোরগঞ্জে ৪৫ হাজার ৭৭৭ হেক্টর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩১০ হেক্টর। প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, শুধু ধানই নয়, ১ হাজার ৬৯ টন মৎস্যসম্পদ পচে গেছে। এর বাজারমূল্য ২ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সিলেটে ১৮২.৭৮ টন, সুনামগঞ্জে ৪৯.৭৫ টন, নেত্রকোনায় ৮০০ টন, হবিগঞ্জের হিসাব মেলেনি, মৌলভীবাজারে ২৫ টন, কিশোরগঞ্জে ১১.৪৫ টন মাছ মরে গেছে। এ ছাড়া ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫৩৫ টন গোখাদ্য ধ্বংস হয়ে গেছে। হাওর পরিস্থিতি নিয়ে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গতকাল এক বৈঠকে ক্ষয়ক্ষতির হালনাগাদ একটি তথ্য তুলে ধরে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ওই বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য সচিব ও মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মহসীন বলেন, প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের ২ হাজার ৮৬০টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১৫ হাজার ৩৪৫টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬ জেলায় মোট ২১৩ দশমিক ৯৫ টন মৎস্যসম্পদের ক্ষতি হয়। এর মধ্যে সুনামগঞ্জে ৩ হাজার ৯০২টি হাঁস ও ৪টি মহিষ মারা গেছে। সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত অতিদরিদ্র ৩ লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে পরিবারপ্রতি ৩০ কেজি চাল ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। রোববার সুনামগঞ্জের হাওর এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সর্বশেষ (২৮ এপ্রিল) তথ্য অনুযায়ী, ৬ জেলায় ৩ লাখ ৩০ হাজার পরিবারের মধ্যে ত্রাণ হিসেবে চাল, ঢেউটিন ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য ৭ জেলায় ৫ হাজার ৮১ কোটি টাকার ক্ষতি উপদ্রুত অঞ্চলকে দুর্গত ও জরুরি অবস্থা ঘোষণার সুপারিশ ক্ষতি কাটাতে কমপক্ষে ৫ বছর সময় লেগে যেতে পারে
আল হাসসা, ২৬ এপ্রিল- শূন্যে ভাসে এমন পাথরের ছবি বা ভিডিও আমরা অনেকে দেখেছি। যার মধ্যে কিছু কিছু ছবি দেখেছি এডিট করা। সত্য-মিথ্যা সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। তবে লোকমুখে শোনা যায়, সৌদি আরবের আল হাসসা শহরের লাইলি-মজনুর পাহাড় বলে পরিচিত স্থানে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় দু’টি পাথর। এটি এমন পাথর যা কি না শূন্যে ভাসে- মাটি থেকে সামান্য উপরে। তবে এ পাথরের সত্যতা জানতে গিয়ে নানাজনের কাছে নানারকম তথ্য পাওয়া যায়। কারো কারো মতে, একজন মুজাহিদকে নিষ্ঠুরভাবে ওই পাথরের উপর গুলি করে মেরে ফেলা হয়। আর সেই ঘটনাটি ছিল এপ্রিল মাসের দিকে। আর তারপরই প্রতিবছর এপ্রিল মাসের নির্দিষ্ট দিনে পাথরটি আধাঘণ্টা মাটির উপর ভাসমান অবস্থায় থাকে। এর চেয়েও অবাক করা বিষয় হলো, যখন পাথরটি শূন্যে ভেসে ওঠে; তখন পাথরটির গায়ে লেগে থাকা রক্ত তাজা দেখায়। এমনকী তা উজ্জ্বল হয়ে গাঢ় বর্ণ ধারণ করে থাকে। পাথরে লেগে থাকা এই রক্ত স্থানীয়রা অনেকবার মুছে ফেলার চেষ্টা করেছেন কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আবারও পাথরের গায়ে রক্ত দেখা যায়। (তবে আমি তেমন কোনো রক্ত দেখিনি) অন্যরা বলেন, ৬২১ খ্রিষ্টাব্দের এক ...
Comments
Post a Comment